Skip to content →

Category: Uncategorized

কষ্টের বিদায় ও করোনার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আসার বিপদ

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু স্যান ফ্রান্সিসকো’র অদূরে ট্রেসি সিটিতে ছেচল্লিশ দিন কাটিয়ে গত ৪ আগষ্ট, ২০২০ তারিখ ভোরে নিউইয়র্কে পৌঁছেছি। করোনার বিপদকাল বলেই বোধহয় মেয়ে ও জামাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নেয়া কষ্টকর ছিল। কে জানে কখন কার ডাক আসে। মেয়ের মাথায় মাথা ঠেকিয়ে, জামাইয়ের সাথে আলিঙ্গন করে বাড়ি থেকেই বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে হয়েছিল এয়ারপোর্টে পৌঁছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে বলে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দূরের ভ্রমণ যখন প্রায় বন্ধ তখন মেয়ের পীড়াপীড়িতে আমি ও আমার গিন্নি গত ১৯ জুন আটলান্টিক উপকূল থেকে তিন হাজার মাইল উড়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে গেছি। আমরা যখন যাই তখন অন্য ষ্টেট থেকে প্লেন, ট্রেন বা বাসে নিউইয়র্ক প্রবেশে বিধিনিষেধের তালিকায় করোনার ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি ষ্টেট। আমাদের ক্যালিফোর্নিয়া অবস্থানকালে বিধিনিষেধের তালিকাভূক্ত হয় ৩১টি ষ্টেট এবং এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া…

Comments closed

করোনাকালে ঝুঁকিপূর্ণ সফর, স্মৃতির বে এরিয়া

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু চতুর্থ বারের মতো স্যান ফ্রান্সিসকো এয়ারপোর্টে অবতরণ করলাম। তিন বার এসেছি প্রয়োজনে। এবার রক্তের টানে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ১৯ মার্চ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত ঘরেই আটকে ছিলাম। প্রায় তিন বছর যাবত স্যান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ায় বাস করছে আমার মেয়ে ও তার স্বামী। আগে নিউইয়র্কেই ছিল। আমাদের জামাতা গুগলে সফটওয়্যার এনালিস্ট ধরনের ভাল জব অফার পেয়ে এখানে চলে আসে। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই ওর কাছে চলে আসতে বলছিল। আসিনি। নিউইয়র্কে তখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। প্রতিদিন ঘনিষ্ট ও পরিচিত জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পাচ্ছিলাম। এক সময়ের সহকর্মী স্বপন হাই, মাহতাব ভাইয়ের ছেলে, কমিউনিটি নেতা কামাল আহমেদ ও আজাদ বাকির চলে গেলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের অনেকে ফোনে তওবা করে বিদায়ের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।…

Comments closed

এক বছরের পাপ মোচনের সহজ তরিকা

সাড়ে চার মাস পর জুমা নামাজ পড়তে গেলাম। পাকিস্তানিদের পরিচালিত মসজিদ হলেও মুসল্লিদের ৮০ শতাংশই বাংলাদেশী। মাঝে মাঝে ওই মসজিদে যাই, আজও গেলাম। কিন্তু বেসুরো গলায় আজান ভালো লাগলো না। সেই কবিতা মনে পড়লো: “কে মোরে শোনালো ওই আজানের ধ্বনি/মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিল কি সমুধুর/আকুল হইল প্রাণ, নাচিলো ধমণী।” মুয়াজজিনের বেতাল কণ্ঠের আজানে আমার প্রাণ আকুল হয়নি, ধমণীও নাচেনি। আজান সুরেলা হওয়া উচিত। ততোধিক গোলমেলে বয়ান শুনে পুরোনো দিনে শোনা এক কাহিনি মনে পড়লো: “গ্রামে এক লোকের গরু মসজিদে ঢুকে পড়েছে। ইমাম সাহেব গরুটিকে কোনোমতে ধরে মসজিদের বাইরে খুটির সাথে বেঁধে রেখেছেন। সন্ধ্যায় গরু ঘরে না ফেরায় গরুর মালিক খুঁজতে খুঁজতে মসজিদের বাইরে গরুটিকে বাঁধা দেখতে পেলেন এবং ইমাম সাহেবকে বললেন গরুটি ছেড়ে দিতে। ইমাম সাহেব লোকটিকে বকাঝকা করলেন,…

Comments closed

দুই মহান লেখক লিও টলষ্টয় ও আন্তন চেখভের সাক্ষাৎ

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু দুটি ভিন্ন সামাজিক শ্রেনির এবং ভিন্ন দুই প্রজন্মের ছিলেন। তা সত্বেও দুই মহান রুশ লেখক লিও টলষ্টয় (১৮২৮-১৯১০) এবং আন্তন চেখভের (১৮৬০-১৯০৪) মধ্যে ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও প্রশংসা। আরেক বিখ্যাত রুশ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির মতে, ‘চেখভের জন্য টলষ্টয়ের পিতৃসুলভ ভালোবাসা ছিল।” পেশায় একজন চিকিৎসক হওয়া সত্বেও চেখভ যক্ষা ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভের জন্য কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং যক্ষায় ভুগে তিনি টলষ্টয়ের মৃত্যুর ছয় বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯০১ সালে টলষ্টয় যখন গুরুতর অসুস্থ ছিলেন, তখন চেখভ লিখেন, “টলষ্টয় মারা গেলে আমার জীবনে বিরাট এক শূন্যতার সৃষ্টি হবে।” চেখভের জন্য টলষ্টয়ও তাঁর হৃদয়ে গভীর ভালোবাসা পোষণ করতেন, বিশেষ করে চেখভের রসিকতা, যা তাঁর গল্পগুলোকে প্রাণবন্ত ও রঙিন করে তুলতো। এটি এমন এক বৈশিষ্ট ছিল, যাকে…

Comments closed

পনের বছর পর কাংখিত বই প্রাপ্তি এবং অনুবাদে বিলম্বের অজুহাত

বেশ কিছু সংখ্যক বইয়ের অনুবাদ কাজে হাত দিয়ে শেষ করতে পারিনি। একটি বই ধরেছিলাম পাঁচ বছর আগে। ৬০০ পৃষ্ঠার বেশি। অনুবাদ করার জন্য অবশিষ্ট আছে ১০ শতাংশ। কেন তীরে এসেও তরী ভেড়াতে পারিনি? কারণ মাঝে নতুন কোনো বই পড়ে এতো ভালো লেগেছে যে, সেটি অনুবাদ করতে শুরু করেছি। মাঝপথে আটকে থাকা বইগুলোর কোনোটা অর্ধেক হয়েছে। সিকি ভাগ হয়ে আছে গোটা চারেক। এগুলোর মধ্যে এমন একটি বইও আছে, যে বই অনুবাদ শুরু করার পর ট্যালিপ্যাথির কারণেই কিনা জানি না, একজন বইপোকা ব্যক্তি, যিনি জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য, তুখোড় বক্তা; তিনি অনুরোধ করলেন বইটির অনুবাদ করার জন্য। আমি ভাবনায় পড়ে গেলাম, “ঘরের কথা পরে জানল ক্যামনে!” আমি যে কাজটি শুরু করেছি তাকে তা না বলে ‘অবশ্যই চেষ্টা করব’ ধরনের উত্তর দিয়েছি। আড়াই…

Comments closed

গাজরের হালুয়া কাহিনী

এক ছিল টোনা আর এক ছিল টুনি। টোনা বলিল, টুনি পিঠা তৈরি করো। টুনি বলিল, তবে চাল আনো, গুড় আনো, তেল আনো, তবে তো পিঠা তৈরি করিব। টোনা বাজারে গেল, চাল আনিল, গুড় আনিল, তেলও আনিল। টুনি বেগুন গাছের শুকনো ডাল কেটে আগুন জ্বালালো, টুনি পিঠা তৈরি করিতে লাগিল ÑÑইত্যাদি।আমারও একবার গাজরের হালুয়া খাওয়ার শখ হয়েছিল। কিন্তু আমার টুনি ছিল না। অতএব বলা হয়নি। হঠাৎ একটা টুনির আবির্ভাব ঘটলো। সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। ১৯৮১ সালের শুরু। তখন আরবের লোকেরা তখন খেজুর খাইত। কেউ আরব দেশ থেকে খেজুর খেজুর আনলে আমরাও দুই-চারটা ভাগে পেতাম এবং নবী-রাসুলের দেশ থেকে আনা খেজুর খেয়ে সওয়াব হাসিল হয়েছে ভেবে আনন্দিত হতাম। খাওয়াও হলো। সওয়াবও পাওয়া গেল। সবে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বোন-ভগ্নিপতির সাথে এক বাসায়…

Comments closed

বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কে আমাদের রোববার

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু গত সপ্তাহের রোববারের পর আজও একটি পারিবারিক পিকনিকে অংশগ্রহণের সুযোগ হলো। এবারের গন্তব্য ছিল বেলমন্ট লেক ষ্টেট পার্ক। এ পার্কের নাম অনেক শুনেছি। কিন্তু আগে কখনো যাওয়া হয়নি। আমার বাড়ি থেকে পার্কের দূরত্ব ৩০ মাইল। নিউইয়র্ক সিটিতে বাস ও সাবওয়ে ব্যবহার করে নগরীর বড় বড় পার্ক Ñ ম্যানহাটানের সেন্ট্রাল পার্ক ব্রঙ্কসের ভ্যান কর্টল্যাণ্ডট পার্ক ও পেলহাম বে পার্ক, ব্রুকলিনের প্রসপেক্ট পার্কসহ আরো অনেক পার্কে গেছি। প্রায় সাড়ে আটশ একর জমির ওপর গড়ে সেন্ট্রাল পার্কের নাম দুনিয়া জুড়ে মানুষ জানে, যেখানে বছরে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ঘুরতে যায়। কিন্তু নগরীর সববেয়ে বড় পার্ক আটলান্টিকে কোল ঘেষে গড়ে তোলা ২,৭৭২ একর আয়তনের পেলহাম বে পার্কে সেন্ট্রাল পার্কের তুলনায় অনেক কম মানুষ যায়। কর্টল্যাণ্ডট পার্কেও আয়তনও প্রায় ১,২০০ একর, সেন্ট্রাল…

Comments closed

হাডসন তীরের ক্রোটন পয়েন্ট পার্কে শনিবার

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু আজকের গন্তব্য ছিল ওয়েস্টচেষ্টার কাউন্টির ক্রোটন পয়েন্ট পার্ক। জায়গাটি নিউইয়র্ক সিটি থেকে ৪২ মাইল উত্তরে। মোটামুটি এক ঘন্টার ড্রাইভ। হাডসন নদী পূর্ব তীরে ৫০৮ এক স্থান জুড়ে গড়ে তোলা নয়নাভিরাম এক বিনোদন কেন্দ্র। তবে এ বিনোদন মূলত প্রকৃতি প্রেমিকদের জন্যই। নদীর পশ্চিম তীরে রকল্যাণ্ড কাউন্টির পার্বত্য শোভা। আউস্টেট নিউইয়র্কের অ্যাড্রিয়নডেক পর্বত থেকে বের হয়ে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পেরিয়ে ক্রোটন পয়েন্ট পর্যন্ত আসতে হাডসন নদীকে প্রায় ২৭০ মাইল অতিক্রম করতে হয়েছে। আর মাইল তিনেক দক্ষিণ-পূর্বদিকে এগিয়ে নদী মিলিত হয়েছে হ্যাভারষ্টে উপসাগরে, যেখানে হাডসনের প্রস্থ বেড়ে প্রায় সাড়ে তিন মাইল হয়েছে। উপসাগরে পড়েই হাডসনের অবসান হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। শেষ হয়েছে আরো ৩৭ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ম্যানহাটানের পশ্চিম ঘেঁষে নিউইয়র্ক হারবারে আটলান্টিক মহাসাগরে। আজ শনিবার কোথাও…

Comments closed

হেমন্তের পোকোনো মাউন্টেনে দু’দিন

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু “ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।” আমেরিকায় ফাগুন মাস নেই, এখন বসন্তকালও নয়। এখন অটাম বা হেমন্তকাল, শীতের দেশের “ফল” বা পাতা ঝরার মওসুম। চিরহরিৎ কিছু গাছের পাতা ছাড়া সব পাতা ঝরে পড়ার সময়। এ সময় আমেরিকার বনে বনে এখন রঙয়ের ছড়াছড়ি। আলবেয়ার কাম্যু যথার্থই বলেছেন, “হেমন্তকাল হলো দ্বিতীয় ঋতু যখন প্রতিটি পাতা ফুল হয়ে যায়।” হেমন্তের প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় জার্মান কবি রেইনার মারিয়া রিলক্ ভাববাদী হয়ে গেছেন: “পাতা ঝরছে, অনেক ওপর থেকে ঝরে পড়ছে, যেন উদ্যানগুলো মরে যাচ্ছে শূণ্যতার উচ্চতায়, —— আমরা সবাই ঝরছি, এই হাত পড়ে যাচ্ছে, তবুও এমন একজন আছেন, যিনি তার চিরন্তনশান্ত হাতে সকল পতনকে ধারণ করেন।” বাংলাদেশে শরত ও হেমন্তকালের পার্থক্য তেমন বোঝা যায় না। দু’টোই এক মনে হয়। সেখানে ছয় ঋতুর…

Comments closed

করোনাকালে আমার কর্মব্যস্ততা এবং ভ্যাকসিন নেয়ার একাল ও সেকাল

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠেছে। ভ্যাকসিন নেয়ার সর্বত্র হুড়োহুড়ি লেগে গেছে। যাদের বয়সে ভাটার টান লেগেছে, অর্থ্যাৎ বয়স ৬৫ পার হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তারাও ভ্যাকসিন নেয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন। অতএব আমিও চেষ্টা করেছি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার জন্য। অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। কিন্তু আমার চেষ্টায় কাজ হয়নি। মার্চ পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটির কোনো সেন্টারে কোনো তারিখে স্লট ফাঁকা নেই। কিন্তু জগৎ সংসারে করিৎকর্মা লোকের অভাব নেই। যে কোনো কাজে তারা ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে পড়তে পারেন। আমার অনেক পরিচিত তরুণ, যারা পেশা ও বয়সগত কারণে অগ্রাধিকার তালিকায় পড়েন না, তাদের অনেকেই ভ্যাকসিন দেয়ার ছবি পোস্ট করেছেন, “প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিলাম” এবং এ যাত্রায় বেঁচে গেলেন বা যাবেন বলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। আমি এমনিতেই আল্লাহর শুকরিয়া আাদায়…

Comments closed