Skip to content →

হেমন্তের পোকোনো মাউন্টেনে দু’দিন

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু

“ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।” আমেরিকায় ফাগুন মাস নেই, এখন বসন্তকালও নয়। এখন অটাম বা হেমন্তকাল, শীতের দেশের “ফল” বা পাতা ঝরার মওসুম। চিরহরিৎ কিছু গাছের পাতা ছাড়া সব পাতা ঝরে পড়ার সময়। এ সময় আমেরিকার বনে বনে এখন রঙয়ের ছড়াছড়ি। আলবেয়ার কাম্যু যথার্থই বলেছেন, “হেমন্তকাল হলো দ্বিতীয় ঋতু যখন প্রতিটি পাতা ফুল হয়ে যায়।” হেমন্তের প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় জার্মান কবি রেইনার মারিয়া রিলক্ ভাববাদী হয়ে গেছেন:

“পাতা ঝরছে, অনেক ওপর থেকে ঝরে পড়ছে,

যেন উদ্যানগুলো মরে যাচ্ছে শূণ্যতার উচ্চতায়,

—— আমরা সবাই ঝরছি, এই হাত পড়ে যাচ্ছে,

তবুও এমন একজন আছেন, যিনি তার চিরন্তন
শান্ত হাতে সকল পতনকে ধারণ করেন।”

বাংলাদেশে শরত ও হেমন্তকালের পার্থক্য তেমন বোঝা যায় না। দু’টোই এক মনে হয়। সেখানে ছয় ঋতুর কারণেই ঝামেলাটা হয়েছে। এক একটি ঋতুকে দুই মাস করে ভাগ করা হয়েছে। যখন এ ঋতুচক্র নির্ণয় করা হয়েছে তখন ঋতু নির্ণয়ের জন্য সম্ভবত জ্যোতির্বিজ্ঞানগত ও আবহাওয়াগত দুটি দিককে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। সেকারণে আমাদের বর্ষা ও গ্রীস্ম যেন শেষই হয় না। একটা লম্বা সময় জুড়ে গ্রীস্ম ও বর্ষা এককার হয়ে থাকে। আমেরিকান ঋতু আসে নির্দিষ্ট তারিখে এবং দিন, ঘন্টা, মিনিট পর্যন্ত বলা থাকে। ভালো করে উপলব্ধি করা যায় ঋতুচক্রকে। এখন হেমন্তকাল চলছে। শুরু হয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর। ৮৩ দিন ২০ ঘন্টা ৩১ মিনিট পর ডিসেম্বরের ২০ তারিখে হেমন্ত পথ করে দেবে শীতকালকে। যদিও এর আগেই জেঁকে বসবে শীত।

সেপ্টেম্বর জুড়ে প্রতি শনিবার লং আইল্যাণ্ডের ভিন্ন ভিন্ন পার্কে দিনব্যাপী ঘুরে তিন সপ্তাহ আগে স্থির করা হয় অন্তত দু’দিনের জন্য নিউ ইয়র্ক ছেড়ে দূরে কোথাও যাওয়ার। আমরা দুই বুড়াবুড়ি বিমানে যাওয়ার দূরত্বে অনায়াসে চলে যাই। প্রায় তিন হাজার মাইল দূরে ওয়াশিংটন স্টেটে কলাম্বিয়া নদীর তীরে রিচল্যাণ্ডে আমার বন্ধু আকরামে বাড়িতে, অথবা ক্যালিফোর্নিয়ায় স্যান ফ্রান্সিসকোর অদূরে মেয়ের বাড়িতে। কিন্তু গাড়ির দূরত্বে যেতে পারি শুধু কেউ নিয়ে গেলে। কোথাও যাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কোথায় কার সাথে যাচ্ছি। ভালো লাগার অনুভূতিগুলোতে একটু ঘাটতি পড়লে প্রকৃতি যত মনোরম হোক তা সারাক্ষণ জুতায় কাঁটা বেঁধার মতো খোঁচা দিতে থাকবে। এক দশক আগের ভার্চুয়াল সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে মুক্তি জহির ও তার স্বামী কাজী জহিরুল ইসলামের সাথে। বোন ও বোন জামাই। তারা আমাদের সাথে নেন। আমরা প্রকৃতি উপভোগ করি। আমাদের সাথে থাকেন সত্তর দশকের কবি ও সাংবাদিক কবি মাহবুব হাসান ও নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট অধিকার প্রবক্তা ও সমাজকর্মী হিসেবে এক নামে পরিচিত কাজী ফৌজিয়া, যিনি কবি জহিরের স্কুলের সহপাঠি। 

মুক্তিই ঘেঁটে গন্তব্য বের করেছে পেনসিলভেনিয়ার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে পোকোনো মাউন্টেন। নিউইয়র্ক সংলগ্ন দক্ষিণে। বিশাল আমেরিকার কয়েকটি স্টেটের মরু অঞ্চল ছাড়া সর্বত্র প্রকৃতির উদারতার স্পর্শ। যেখানে যাই সৃষ্টিকর্তার উচ্চারিত বাণী মনে পড়ে – “ফা-বি আইয়ে আলা-ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান – অতএব, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে।”

পেনসিলভেনিয়ার কথা উঠলেই প্রথমে ভাবি ফিলাডেলফিয়া থেকে মাইল ত্রিশেক দূরে চেস্টার কাউন্টিতে একশ একর জায়গার ওপর স্থাপিত শ্রীলঙ্কার সুফি সাধক বাওয়া মহীউদ্দিনের দরগাহ’র কথা। তিন দফা ফিলাডেলফিয়া গেলেও সেই দরগাহ’য় যাওয়া হয়নি। কিন্তু প্রায়ই তাঁর কবিতা ও বক্তব্য পাঠ করি:

“যা বদলে যায় তা আমাদের প্রকৃত জীবন নয়।

আমাদের মাঝে আরেকটি সত্তা, আরেকটি সৌন্দর্য আছে,
এটি আলোর সেই রশ্মির কব্জায়, যা কখনো বদলে যায় না।

আমাদের খুঁজে পেতে হবে কীভাবে এর সাথে মিলিত হয়ে
সেই অপরিবর্তণীয় সত্তার সাথে এক হবো।

এই সত্যের মর্ম আমাদের উপলব্ধি করতে হবে

সেজন্যই তো আমরা এসেছি এ পৃথিবীতে।
তোমার হৃদয়ের আয়তন একটি অণুর চেয়ে বড় নয়,

ইশ্বর সেখানে স্থাপন করেছেন আঠারো হাজার বিশ্ব।”

বাওয়া মহীউদ্দিন বলেছেন, “জ্ঞানী ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের ভুল সংশোধন করার গুরুত্ব জানেন; যারা জ্ঞানহীন তারা অন্যের ভুল খোঁজা প্রয়োজনীয় মনে করে।” আমরা ভ্রমণসঙ্গীরা কেউ কারো ভুল খুঁজি না। প্রত্যেকে যার যার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। মুক্তি ও কবি জহিরের দুই মেয়ে সারাফ ও নভো আমাদেরকে শৈশবের কাছে রাখে।

নেট ঘেঁটে দেখলাম “পোকোনো” শব্দটি নেটিভ আমেরিকান বা আদিবাসীদের, যার অর্থ “দুই পর্বর্তের মধ্যবর্তী নদী, অর্থ্যাৎ ডেলাওয়ার নদীর দুই পাশের পর্বতমালা। মোট আয়তন প্রায় আড়াই হাজার বর্গমাইল। পোকোনো লেক এর পন্টিয়াক পাথ এ একটি লেক ভাড়া করা হয়েছে দু’দিনের জন্য। ১৪ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর। দু’দিনের জন্য বাড়িটি আমাদের। খবরদারি করার কেউ নেই। আমরা যাবো, নিজেরাই রান্না করবো, বাকি সময় ঘুরবো। ফিরে আসার সময় যেমন ছিল, তেমন টিপটপ রেখে আসতে হবে। যাওয়ার দুই সপ্তাহ আগে বিপত্তি ঘটলো। আমি যেখানে কাজ করি, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ এর সম্পাদক ডা: ওয়াজেদ এ খান বললেন, ১৩ অক্টোবর তার ক্যাটারেক্ট সার্জারি। অর্থ্যাৎ ১৩ ও ১৪ তারিখ তিনি থাকবেন না এবং আমাকে থাকতে হবে। পোকোনো যাওয়া নিয়ে তাঁকে আর কিছু জানালাম না। আমি তো তাঁর সার্জারি বন্ধ করে যেতে পারি না। জহির ভাইকে বললাম, আমার যাওয়া হবে না। আপনার ভাবি গেলে যেতে পারে। তিনি পরদিন ১৫ অক্টোবর যেতে বললেন। মোটামুটি সায় দিলাম, দেখা যাক, যাওয়ার কি ব্যবস্থা আছে। অনলাইনে টিকেট করতে গিয়ে দেখলাম বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। একবার দেখাচ্ছে বাসে যেতে সময় লাগবে ৬ ঘন্টা, আরেক জায়গায় দেখাচ্ছে ২ ঘন্টা। কাজী ফৌজিয়া আমাকে না জানিয়েই খোঁজ নিয়েছে এবং আমার যাওয়া নিশ্চিত করতে নিজেই ৫০ ডলারে টিকেট কেটে আমাকে মেইল করেছেন। আসলেই মেয়েটি জিনিয়াস, শুধু নামে কাজী নয়, কাজের কাজী। আমেরিকান জিনিসপত্রের দাম এবং যানহাহনের ভাড়ার রকমফের বিস্ময় সৃষ্টি করে। ফিলাডেলফিয়ায় দূরত্ব নিউইয়র্ক থেকে পোকোনোর দূরত্বের মতই। রাউণ্ড ট্রিপ বাস ভাড়া মাত্র ২০ ডলার। ওয়াশিংটন ডিসিতে রাউণ্ড ট্রিপ বাস ভাড়া ৩৪ ডলার। আর পোকোনো মাউন্টেনে যেতে ওয়ান ওয়ে বাস ভাড়া ৫০ ডলার।

১৩ অক্টোবর রাতে ডা: ওয়াজেদ খান জানান ১৪ অক্টোবর তার সার্জারি বাতিল হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় মেডিকেল চেকআপের জন্য তিনি অফিসে আসতে পারবেন না। সকাল ৯টায় বের হওয়ার আমার স্ত্রী  পই পই করে বলে দিয়েছে, আমি যেন অফিসে যাওয়ার পথে পান কিনি এবং মাহবুব ভাইকে ফোন করি পান নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি স্ত্রী আজ্ঞা পালন করে পান কিনি, অফিসে গিয়ে মাহবুব ভাইকে ফোন করি পান নিয়ে যেতে। মাহবুব ভাই আসেন, পান নিয়ে যান। জহির ভাই প্রত্যেককে যার যার ঠিকানা থেকে টুকিয়ে টুকিয়ে গাড়িতে তুলে ১২টার মধ্যে রওয়ানা হয়ে যান। 

ম্যানহাটানের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়বে ১৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টায়। যে ট্রেন ওখানে যায়, সেই ট্রেন আমার কাছে স্টেশন থেকে যায় না বেশ কিছুদিন থেকে। বেশ খানিকটা হেঁটে অন্য ট্রেনে গিয়ে সঠিক ট্রেনে ওঠতে হবে। করোনা’র কারণে অনেক নিয়ম, সময় বদলে গেছে। যাতে টার্মিনালে পৌছতে কোনোভাবে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য আমি ভোর সাড়ে ৫টায় বাসা থেকে বের হই। কিন্তু দ্রুত পৌছে যাই। হাতে তখনো দেড় ঘন্টা। টার্মিনালে হাঁটার সময় হঠাৎ ইউএস আর্মির ইউনিফর্ম পরা এক লোককে বিদ্যুৎ গতিতে ছুটতে দেখে আমার দৃষ্টি তাকে অনুসরণ করে। সেনা সদস্য যেহেতু অস্ত্রধারী ছিল না, অতএব গুরুতর কিছু ঘটেনি বলেই মনে হয়। তবুও কিছু তো ঘটেছে। এগিয়ে যাই। এসকেলেটরে উঠতে গিয়ে বয়স্ক এক লোক পড়ে গেছে এবং তার জামা আটকে ছেঁচড়ে ওপরে উঠছে। দুই মিনিটও হয়নি, যেন অনস্তিত্ব থেকে হাজির হলো অনেক ক’জন পুলিশ সদস্য। এসকেলেটর বন্ধ করে দিয়ে ভদ্রলোককে উদ্ধার করতেও বেশ সময় লাগলো। রক্তে বেচারার মুখের ডান দিক লাল হয়ে গেছে। যথাসময়ে আমার বাস ছাড়লো। দুই ঘন্টা পর পোকোনো মাউন্টেন বাস স্টপেজে পৌছলে জহির ভাই ও মাহবুব ভাই এসে আমাকে নিয়ে গেলেন আরো আধা ঘন্টার দূরত্বে গভীর জঙ্গলের মাঝে ভাড়া নেয়া কটেজে। সবার  অভিজ্ঞতা শুনি। মহিলারা রান্নার সামগ্রী কেনাকাটা করেছেন। একটি বিশালাকার ভালুক লোকালয়ে এসেছিল, সবাই ছবি তুলেছে। নভো একটা সাপ দেখেছে। আমি পৌছার পর কটেজের পাশে একঝাঁক ময়ুর দেখলাম।

গাছের পাতা রঙ বদলাতে শুরু করেছে অক্টোবরের শুরু থেকে। ঝরে পড়ছে অবিরত। তাপমাত্রা ও দিনের আলোর পরিমাণ কমার সাথে সাথে গাছের সবুজ পাতার রঙ পাল্টানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সব গাছের পাতা এক রং ধারণ করে না। কোনোটার পাতা হয়ে যায় টকটকে লাল, কোনোটার হলুদ, সোনালি বা খয়েরি। এই বৈচিত্রে বন অপূর্ব রূপ ধারণ করে। পাতার পদলে যাওয়া রঙের বাহার দেখতে পোকোনো মাউন্টেনে প্রতিবছর হেমন্তে অন্তত তিন কোটি মানুষ আসে। পর্বত ঘিরে এবং উপত্যকায় তাকিয়ে শুধু চোখ জুড়ানো নয়, হৃদয় শান্ত হয়ে যায়। সমগ্র পরিবেশ যেন বিশাল ক্যানভাস, শিল্পী তার অভ্যস্ত হাতে সবগুলো রঙ ব্যবহার করেছেন ক্যানভাসে। শিল্পবোদ্ধা নয় এমন মানুষকে মুগ্ধ হতে হয়। শুধু পাতার রঙ বদলানো বা পাতা ঝরা দেখতে নয়, হাইকিং, জলপ্রপাত দেখতেও আসে। পেনসিলভেনিয়ায় অসংখ্য পর্বত এবং বহু জলপ্রপাত। পোকোনো তেমন উচু পর্বত নয়। আমাদের দেখার কর্সূচিতে একটি জলপ্রপাত অন্তর্ভূক্ত – বুশকিলস ফলস। ছোটবড় আটটি জলপ্রপাতের সমষ্টি বুশকিলস। সবচেয়ে বড়টির পানি ঝরে পড়ছে মাত্র ১০০ ফুট উচু থেকে। একটি পারিবারিক কোম্পানি ১৯০৪ সাথে থেকে বুশকিলস জলপ্রপাত নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ করছে পর্যটকদের কাছ থেকে তুলনামূলক বেশি ফি আদার করে। মাথাপিছু প্রবেশ মূল্য ১৫ ডলার, শিশুদের ১২ ডলার। আমি ও মাহবুব ভাইয়ের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। সিনিয়র হিসেবে ১ ডলার কম নিল। কোম্পানিটি জলপ্রপাতের নাম দিয়েছে “নায়াগ্রা অফ পেনসিলভেনিয়া।” আমরা রসিকতা করে যেমন তুলনা দেই “কোথায় আগরতলা আর কোথায় চকির তলা”, নায়াগ্রার সাথে বুশকিল ফলসের তুলনা ঠিক তেমন।  নায়াগ্রায় বার্ষিক গড়ে প্রতি সেকেণ্ডে পানি পড়ে ৮৫,০০০ কিউবিক ফুট, আর বুশকিলে ০.০৮৪৯৬ কিউবিক ফুট। নায়াগ্রার মতো জলপ্রপাত দেখতে কোনো ফি লাগে না। বড় জিনিসের সবকিছু বড়। ১৮৫০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নায়াগ্রায় পড়ে গিয়ে বা আত্মহত্যা জনিত কারণে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫,০০০। প্রতিবছর গড়ে ৩০ জন; আর বুশকিল জলপ্রপাতে পা পিছলে মারা গেছে মাত্র একজন। একজন আহত হয়েছিল বলেও জানা যায়। তবে কাছে থেকে জলধারার গড়িয়ে পড়া দেখতে কর্তৃপক্ষ জলপ্রপাতের চার পাশে আঁকাবাঁকা কাঠের সিঁড়ি তৈরি করে দুর্গম পার্বত্য খাতের প্রায় তলদেশ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন, এটি প্রশংসনীয়।

জলপ্রপাতে থেকে উঠে এসে আমরা ছোট একটি লেকের পাশে বসে সাথে আনা হালকা খাবার খেয়ে নিলাম। খাওয়া নিয়ে মাথাব্যথা নেই। রাতে খিচুরি ও গরুর মাংস ভুনার প্রস্তুতি করে আসা হয়েছে। কাজী ফৌজিয়া বলছিলেন ডেলাওয়ার রিভার গ্যাপে নিয়ে যেতে। কিন্তু সেখানে পৌছার সঠিক দিশা দিতে পারছিল না জিপিএস। বরং কিছু সময় উল্টাপাল্টা ঘুরালো। অগত্যা আমাদের সাময়িক আবাসের পথ ধরতে হলো। খেয়ে দেয়ে, প্রত্যেকের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ও মুভি দেখে রাত ১টায় ঘুমাতে গেলাম সকালে কোন একটি লেকের পাশে প্রাত:ভ্রমণের প্রোগ্রাম করে।


১৬ অক্টোবর বেলা ১২ টার মধ্যে কটেজ ছেড়ে দিতে হবে। সকালের বেড়ানো হলো না। শেষ রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। আমরা নাশতা করে গোছগাছ করে নিলাম। ফেরার পথে পন্টিয়াক লেকে যাত্রাবিরতি করে হালকা বৃষ্টির মধ্যে খানিক নিসর্গ দেখে গাড়িতে উঠলাম।

Published in Uncategorized

Comments are closed.