আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু অসচেতনতার কারণে আমরা একপেশেভাবে বাঙালিদের গালমন্দ করলেও অসচেতনতা আসলে বিশ্বব্যাপী এক ব্যাধি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত একটি দেশেও করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীর মাঝেও জনঅসচেতনতা দেখে অবাক হয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে মাস্ক পরিধানে না করলে জরিমানা নির্ধারণ করা হলেও রাস্তাঘাটে চলাচলককারী লোকজনকে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করতে দেখছি। শুধু দোকানপাটে প্রবেশ করতে লোকজন পকেট থেকে মাস্ক বের করে নাকে-মুখে এঁেট নেয়। রেস্টুরেন্টগুলো চালু থাকলেও সেখানে বসে খাওয়া এখনো নিষিদ্ধ। স্যান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া বা সিলিকন ভ্যালি হিসেবে খ্যাত এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ আয়সম্পন্ন এলাকাগুলোর অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৩ লাখ ৮৭ হাজার উচ্চ দক্ষ আইটি প্রফেশনালের মধ্যে ২ লাখ ২৫ হাজারের অধিক লোক সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত। এর বাইরেও ওইসব প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য কাজে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক উচ্চ বেতনধারী…
১৮ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু Posts
আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু মৃত্যুভীতি পৃথিবী জুড়ে মানুষকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে মৃত্যুর ভীতি এক ধরনের — এ মৃত্যু হঠাৎ আসে। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে বোঝা যায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু আসন্ন। তার মৃত্যুতে পরিবার দু:খ করে। আবার মৃত্যু কখনও কোনো আভাস না দিয়েই আসে। সুস্থ মানুষ হাসিখুশি বাড়ি থেকে বের হয়ে অথবা দিন শেষে কাজ সেরে ফেরার পথে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে মারা যায়। অনেক সময় দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে পরিবারশুদ্ধ সকলে মারা পড়ে। তাদের কবরস্থ করা বা চিতায় আগুন দেয়ার মতো আপনজন পাওয়া যায় না। করোনার মতো মহামারীর সময় মৃত্যুভীতি সর্বব্যাপী রূপ নেয়, যা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। কে কখন তার ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী আজরাইল বা যমরাজের হাতে পড়বো তা কেউ জানি না। যেভাবেই হোক মানুষকে মরতে হবেই। এই অধ্যায় থেকে কারও…
১৫ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু এসএসসির সার্টিফিকেট অনুযায়ী নজিবুর রহমান ভাই আমার চেয়ে এক বছরের বড়। উনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন ১৯৬৮ সালে, আমি দিয়েছি ১৯৬৯ সালে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করেছেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলাম। বাংলাদেশে তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয় আট বছর আগে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল। ১১ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চারটি দিন আমরা এক সঙ্গেই ঘুরেছি নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি’র বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। মাত্র তিন দিনে আমাদের মাঝে যে নিবিড় হয়েছিলাম, বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে বহু বছর ধরে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা সাক্ষাতেও সে সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। তাঁর নাম নজিবুর রহমান। আমার পরিচিত জগতে অত্যন্ত সহজ-সরল, নির্মোহ-নিরহঙ্কার ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি: এর হিউম্যান রিসোর্সেস…
১৭ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু করোনা মহামারীতে এখনো আমি এবং আমার স্ত্রী কামরুন নাহার মনি বেঁচে আছি বলেই আমাদের বিবাহিত জীবনের ৪০ বছর পূর্ণ হলো। ৪০ বছর আগে ২৮ এপ্রিল আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম। বিবাহিত জীবনের একচল্লিশ বছরের সূচনায় বন্ধু-শুভাকাংখী ও আত্মীয়স্বজনকে আমাদের অভিনন্দন। গতবছরের সূচনায় করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হলে মানুষের জীবনহানির সঙ্গে মানবতারও অপমৃত্যু হয়েছিল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কাছের মানুষটিও তেমন কান্নাকাটি করেনি। চারদিকে মৃতের সঙ্গে মানুষের যে আচরণ দেখছি তাতে আমার বিশ্বাস জন্মেছে যে, গতবছর এই সময়ে করোনার অভিশাপ নিয়ে মৃত্যু হলে আমার ক্ষেত্রে আচরণেও কোনো ব্যতিক্রম ঘটত না। সবার কামনা হতো একটাই, যতো দ্রুত সম্ভব লাশ মাটিচাপা দেওয়া হোক। করোনার সংক্রমণ জীবিতকে অস্পৃশ্য করে তুলেছিল, এবং মৃতকে অনেকটা অভিশপ্তের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। দেশে ও…
১৮ Commentsঅনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু আমরা সাধারণভাবে ইবাদতকে বিবেচনা করি আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে। ইবাদত বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। প্রেমিক প্রেমিকার পরস্পরের প্রেম নিবেদনের নিবিড়তার সঙ্গে তুলনীয় মনে করা যেতে পারে। রোমান্টিকতা ও আধ্যাত্মিক পরিপ্রেক্ষিতে ইবাদতের বহুবিধ অর্থ রয়েছে। কবিতায় ইবাদতের এ ধারণাকে বহুভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ধারণার ওপর নিচে উর্দু ভাষার বিখ্যাত কবিদের বিভিন্ন কবিতার অংশবিশেষ উল্লেখ, যা ইবাদতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। “ক্যায়া ও নমরুদ কি খুদা-ই থি বন্দেগি মে মেরা ভালা না হুয়া।” (তার মাঝে কী নমরুদের ইশ্বরত্ব ছিল? ইবাদতে তো আমার কল্যাণ হয়নি)। —— মির্জা গালিব“ আশিকী সে মিলেগা এ্যয় জাহিদ বন্দেগি সে খুদা নাহিঁ মিলতা।” (প্রেমেই আল্লাহকে পাবে হে নসিহতকারী, ইবাদত করে আল্লাহকে পাওয়া যায় না)। — দাগ দেহলভি“ বন্দেগি হাম নে ছোড় দি হ্যায় ফরাজ…
২৪ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু আমরা যুদ্ধ ও মহামারীতে অগণন মানুষের মৃত্যুর কথা জানি। গত একটি বছর ধরে আমরা প্রত্যক্ষ করছি যে কত স্বল্প সময়ে মৃত্যু সর্বব্যাপী হয়ে উঠতে পারে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৩২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। একক দেশ হিসেবে বিশ্বের সর্বশক্তিমান দেশ যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে এই ভাইরাস সংক্রমণে। গতকাল ৪ মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ৫ লাখ ৮৩ হাজারের অধিক লোক। বিপুল সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা আমাদেরকে আরও সহজভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে আমরা মারা যাই। মৃত্যুর অনিবার্যতা নিয়ে কারও সংশয় না থাকলেও জীবিত প্রতিটি মানুষকে করোনা মহামারী মৃত্যুর এই উপলব্ধিকে মনে গেঁথে দিয়েছে। একটি হচ্ছে অন্যদের মৃত্যুকে স্বীকার করা, আরেকটি হচ্ছে, আমাদের নিজেদের মৃত্যুকে মেনে নেওয়া। এটি শুধু আবেগের কথা নয়, ধারণা করাটাও অনেকের…
১৮ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু কোনো কোনো গ্রেফতারের ঘটনায় আমি ক্ষুব্ধ হই ও দু:খ অনুভব করি। বিনা কারণে গ্রেফতারের পর রাজনৈতিক নেতাদের গাড়ি পোড়ানো, বোমা তৈরি অথবা এ ধরনের মামলায় আসামি করার ঘটনায় আমি বিস্মিত হই। পুলিশী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ‘রিমান্ড,’ ‘ক্রসফায়ার,’ ও ‘এনকাউন্টার’ জাতীয় শব্দগুলো শুনলে ভীত হই। আমি জানি, আমার ‘ক্ষোভ’, ‘বিস্ময়,’ ও ‘ভীতি’তে কোনো কিছুর পরিবর্তন ঘটবে না। যেভাবে যা চলছে, তা চলতেই থাকবে। আমার মাঝে বৈপরীত্যও আছে। কোনো কোনো গ্রেফতারের ঘটনায় আমি বিরল আনন্দও লাভ করি। সাম্প্রতিককালের একটি গ্রেফতারে আমি খুশি হয়েছি। সেটি ছিল ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানির গ্রেফতার। তার বয়স ২৭ বছর হলেও তিনি খর্বাকৃতির। ‘গ্রোথ হরমোনের’ ঘাটতির কারণে তার দেহের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটেনি। এতে তার কোনো ভূমিকা ছিল না। সৃষ্টিকর্তা তাকে এভাবেই পৃথিবীতে…
২৮ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু ইশ্বরের মৃত্যু সম্পর্কে জার্মান দার্শনিক ফ্রেডারিক নিটশে’র সংশয়বাদী তত্ত্ব উনিশ শতকে যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল এখনো সে বিতর্কের অবসান ঘটেনি। তাঁর এ ধারণার ভিত্তি হচ্ছে, মানুষ আলোকপ্রাপ্ত হয়ে ওঠার সঙ্গে ইশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনা নির্মূল হয়েছে বলে তিনি যে ধারণা পোষণ করেন তা ব্যক্ত করার উদ্দেশে তিনি বলেছেন “`”ইশ্বর মৃত।” তবে ”ইশ্বরের মৃত্যু” তত্ত্বের প্রবল প্রবক্তারা নিটশের ধারণার সঙ্গে সামান্য ভিন্নমত পোষণ করে বলেছেন এক পর্যায়ে খ্রিস্টান ইশ্বরের অস্তিত্ব থাকলেও এখন তিনি আর নেই। নিটশের পুরো বক্তব্য হচ্ছে, ”ইশ্বর মৃত। ইশ্বর মৃতই আছেন এবং আমরাই তাঁকে হত্যা করেছি। আমরা যারা সকল খুনির মাঝেও খুনি, তাদের পক্ষে কীভাবে পরিতৃপ্ত থাকা সম্ভব? যিনি ছিলেন পবিত্রতম এবং পৃথিবীতে ছিলেন প্রচন্ড ক্ষমতাধর, আমরা আমাদের ছুরির আঘাতে তাঁকে হত্যা করেছি, এই রক্ত…
২৪ Commentsআনোয়ার হোসেইন মঞ্জু ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ যখন সমগ্র ভারতে তাদের শাসন ও শোষণ পাকাপোক্ত করে ফেলেছে, পুরো সমাজ, রাজনীতি, ভূমি ব্যবস্থা, বিচার ও প্রশাসনে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং পুরনো সালতানাত বা সাম্রাজ্যের কোনো কিছু আর অবশেষ নেই, তখন স্যার সৈয়দ আহমদ খান ফেলে আসা বিস্মৃত দিনের ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে নতুন করে স্মরণ করতে শুরু করেন। দিল্লির এক বিদ্যানুরাগী ব্যবসায়ী মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে প্রণীত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ “আইন-ই-আকবরী”কে সংকলন ও সম্পাদনা করে প্রকাশ করার পরামর্শ দেন। আকবরের নবরত্ন সভার অন্যতম দরবারী আবুল ফজল এর লেখা এই গ্রন্থে আকবরের শাসনামলের ইতিহাস, সংস্কৃতি-সভ্যতা, প্রশাসন ব্যবস্থাসহ মোগল দরবারের সকল কার্যাবলীর বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ রয়েছে। স্যার সৈয়দ আহমদ খান এতে সম্মত হন। সিপাহি বিদ্রোহের পর মুসলমানদের ভাগ্যে যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল এবং ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ যেভাবে…
২৪ Commentsবইয়ের নাম: বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ ও শান্তিলেখক: খুশবন্ত সিংঅনুবাদক: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জুপ্রকাশনা প্রতিষ্ঠান: ‘স্বরে অ’ উর্দু ও হিন্দিতে একটি প্রবাদ আছে: “দের আয়ে দুরস্ত আয়ে” — দেরিতে এসেছে ঠিকভাবে এসেছে।” ইংরেজিতে সমার্থক কথা চালু আছে: “বেটার লেট দ্যান নেভার” — একেবারে না হওয়ার চেয়ে বরং বিলম্বে হোক। একটু বিলম্ব হলেও আরেকটি বই আমার অনুবাদ করা আসছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বই: “বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ ও শান্তি।” লেখক খুশবন্ত সিং। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিউইয়র্ক টাইমস এর জন্য যেসব রিপোর্ট করেছেন সেই রিপোর্টগুলোর সংকলন। তিনি সীমান্ত এলাকায় ঘুরেছেন, শরণার্থী শিবিরে গেছেন, গোপন অবস্থানে বাংলাদেশ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানি, ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে: জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান লে: জেনারেল টিক্কা খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এছাড়াও…
১১,১৯৬ Comments