আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু
অসচেতনতার কারণে আমরা একপেশেভাবে বাঙালিদের গালমন্দ করলেও অসচেতনতা আসলে বিশ্বব্যাপী এক ব্যাধি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত একটি দেশেও করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীর মাঝেও জনঅসচেতনতা দেখে অবাক হয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে মাস্ক পরিধানে না করলে জরিমানা নির্ধারণ করা হলেও রাস্তাঘাটে চলাচলককারী লোকজনকে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করতে দেখছি। শুধু দোকানপাটে প্রবেশ করতে লোকজন পকেট থেকে মাস্ক বের করে নাকে-মুখে এঁেট নেয়। রেস্টুরেন্টগুলো চালু থাকলেও সেখানে বসে খাওয়া এখনো নিষিদ্ধ। স্যান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া বা সিলিকন ভ্যালি হিসেবে খ্যাত এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ আয়সম্পন্ন এলাকাগুলোর অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৩ লাখ ৮৭ হাজার উচ্চ দক্ষ আইটি প্রফেশনালের মধ্যে ২ লাখ ২৫ হাজারের অধিক লোক সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত। এর বাইরেও ওইসব প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য কাজে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক উচ্চ বেতনধারী কর্মী রয়েছে। ফেসবুক, অ্যাপল, অ্যালফাবেট/গুগল, ওরাকল, ভিসা, ওয়েল ফারগো, ইনটেল, ই-বে, ইয়াহু, সিসকো, শেভরন, এনভিডিয়া, নেটফ্লিক্স, হিউলেট প্যাকার্ডের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সদর দফতর ছাড়াও সিলিকন ভ্যালিতে আরও প্রায় ৬৫টি বড় বড় কোম্পানি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিম্ন পর্যায়ের কর্মীর গড় বেতন বার্ষিক ৫০ হাজার ডলার এবং সর্বোচ্চ বার্ষিক বেতন সাড়ে ৪ লাখ ডলার। বাড়িঘরের দাম ও ভাড়া অত্যধিক। আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনাকালেও ভালো ব্যবসা করছে এবং সে কারণে গত একবছর যাবত কর্মীরা ভার্চুয়াল অফিস করলেও লোক ছাঁটাইয়ের হার প্রায় শূন্য।
স্যান ফ্রান্সিসকো উপসাগরের দক্ষিণ উপকূল ঘিরে বেশ কয়েকটি সিটি স্যান হোজে, পালো আল্টো, মাউন্টেন ভিউ, মেনলো পার্ক, রেডউড, সানিভেল, স্যান্টা ক্লারা, কুপারটিনো সিলিকন ভ্যালির মধ্যে পড়ে। সিটিগুলোর মধ্যে শুধু স্যান হোজে একটি বড় সিটি। তুলনামূলকভাবে ছোট একটি ভৌগোলিক এলাকায় এতো উচ্চ শিক্ষিত লোকজনের বিপুল উপস্থিতি সত্বেও করোনার ভয়াবহতার মধ্যে তাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করা খাপছাড়া লাগছে। বিশ্বের আরও অনেক দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ আঘাত হেনেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে যেখানে দৈনিক মৃতের হার ৭০০ জনে নেমে এসেছিল তা থেকে বেড়ে গত ১৯ এপ্রিল মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে ১,২৭৫ জন। সংক্রমণ হার ও হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনায় ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল ২০ এপ্রিল পর্যন্ত মারা গেছে ৫,৬৭,৮৭১ জন এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৬১,০৪৫ । বাংলাদেশের মতো একটি দেশে যে কোনো নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রশাসনকে অনেক ধকল পোহাতে হয়। করোনার বিস্তার প্রতিহত করতে লকডাউন জারি করে, কান ধরে উঠবস করানো, লাঠিচার্জ বা জরিমানা আদায় করেও লোকজনকে রাস্তায় নেমে আসা থেকে বিরত রাখতে হিমসিম খাচ্ছেন্ন ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা। নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে। করোনাকালে আমাকে দ্বিতীয় দফা আটলান্টিক উপকূল থেকে প্রায় তিন হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে নর্দান ক্যালিফোর্নিয়ায় আসতে হলো। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের মাঝেও এসেছিলাম। তখনও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়নি। করোনা টেস্টও ব্যাপকভাবে শুরু হয়নি। বিমান যাত্রার প্রাক্কালে করোনা টেস্ট করার কড়াকড়ি ছিল না। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়া করোনা সংক্রমণের হটস্পট ছিল। নিউইয়র্ক স্টেট সরকার নির্দেশ জারি করেছিল যে করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত স্টেটগুলো থেকে কেউ যদি নিউইয়র্কে আসে তাহলে তাকে করোনা টেস্ট করাতে হবে এবং ১৪ দিন হোম আইসোলেশনে থাকতে হবে। আমাকেও তা করতে হয়েছিল। তা না হলে আমাকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হতো।
আইসোলেশনে থাকার প্রতিদিন সিটির স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন ফোন করে খবর নিয়েছে আমি ঠিক আছি কিনা। আমার কোনো প্রয়োজন আছে কিনা। গতবছরের অক্টোবরে আমার অফিসের একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আমাকে দ্বিতীয় দফা টেস্ট করাতে হয়। ইতোমধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের উভয় ডোজ নিয়েছি। ক্যালিফোর্নিয়ার এয়ার টিকেট কেনার সময় দেখা গেল বিমান যাত্রার দশ দিনের মধ্যে টেস্ট করানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। কাজেই আবারও টেস্ট করাতে হলো। ১৫ অক্টোবর নিউইয়র্কের জেএফকে এয়ারপোর্টে পৌছে যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখতে পেলাম। চেক-ইন কাউন্টারগুলোতে বেশ ভিড়। গতবছরের জুনে এয়ারপোর্ট অনেকটাই জনমানবশূন্য ও রীতিমতো ভূতুড়ে পরিবেশ ছিল। ফ্লাইটে প্রতি সারিতে তিন আসনের মাঝেরটি ছিল যাত্রীশূন্য। এবার যাত্রী ও ফ্লাইট সংখ্যা বেড়েছে। প্রতি সারির প্রতিটি আসন যাত্রী পূর্ণ। এবার মাঝখানের আসন ফাঁকা নেই। পাইলট বার বার মাস্ক পরে থাকার ফেডারেল গাইডলাইন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। সাড়ে ছয় ঘন্টা পর স্যান ফ্রান্সিসকো এয়ারপোর্টে পৌছে সেখানেও প্রচুর যাত্রী দেখতে পেয়েছি। সবার নাক মুখ মাস্কে ঢাকা।
স্যান ফ্রান্সিসকো এয়ারপোর্ট থেকে বের হই দুপুরের আগে। হাইওয়ে ছেড়ে জনবসতি এলাকা অতিক্রম করার সময় খুব কম লোকের মুখেই মাস্ক দেখেছি। শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ লোকদের একজনও মাস্ক পরা ছিল না। এশিয়ান চেহারার দু’চারজনের মুখে মাস্ক চোখে পড়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসম রাজ্যজুড়ে মাস্ক পরিধান না করার যে জরিমানা ধার্য করেছেন, তা উচ্চ। বাড়ির বাইরে বের হলে ও অন্য লোকজনের কাছাকাছি এলে মাস্ক বাধ্যতামূলক। নির্দেশ ভঙ্গ করলে ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রথম বার জরিমানা ১০০ ডলার, একই ব্যক্তি দ্বিতীয় বার নির্দেশ ভঙ্গ করলে জরিমানা ২০০ ডলার এবং তৃতীয় বার ৫০০ ডলার। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে জরিমানা ধার্যের নিয়ম একটু ভিন্ন। সেখানে প্রথমবারের নির্দেশ ভঙ্গের জরিমানা ২৫০ ডলার, দ্বিতীয় বার ৫০০ ডলার এবং তৃতীয় বার ১,০০০ ডলার। কোনো কোনো কাউন্টিতে নির্দেশ লংঘনে ব্যক্তির ক্ষেত্রে তৃতীয় বারের জরিমানা ২,০০০ ডলার পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তৃতীয় বারের জরিমানা ১০,০০০ ডলার পর্যন্ত।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৬ বছর বয়সের অধিক সকলের জন্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন গ্রহণ করলেও মহামারী নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মাস্ক পরার নির্দেশ বহাল রয়েছে। স্যান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর ও গ্ল্যাডস্টোন সেন্টার ফর এইডস রিসার্চের ডাইরেক্টর ড. মনিকা গান্ধী বলেছেন, “কেউ যদি ভ্যাকসিন নিতে না চায় তাহলে সেটি তার অধিকার, কিন্তু মহামারীর বিস্তার রোধে মাস্ক পরা জরুরী।” তাঁর সহকর্মী ড. জর্জ রাদারফোর্ড ২০২২ সাল পর্যন্ত মাস্ক পরার প্রয়োজন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। নিউইয়র্কে পথেঘাটে, যানবাহনে মাস্ক ছাড়া কাউকে দেখিনি। ক্যালিফোর্নিয়ায় মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকা ও প্রশাসনের সতর্কতা সত্বেও মাস্ক পরিধানে ব্যাপক নির্লিপ্ততা আমাকে বিস্মিত করেছে।
49htvj
qBPWCMTodhRX
FewSoPYQdIUvApDh
lsUBkbQegH
BsHOLcYVpxvEkIqG
GUaMNbvSlz
CUzLPuQrFinp
VRuUpegjZxisdEkI
JuhrbcfvAGgd
妊娠中のポルノ .t9jzBTek6rQ
Some times its a pain in the ass to read what people wrote but this site is rattling user pleasant!
This is a very good tips especially to those new to blogosphere, brief and accurate information… Thanks for sharing this one. A must read article.
LGNapnCmtiBvUsx
Hmm is anyone else experiencing problems with the images on this blog loading? I’m trying to find out if its a problem on my end or if it’s the blog. Any feedback would be greatly appreciated.
Hi, just required you to know I he added your site to my Google bookmarks due to your layout. But seriously, I believe your internet site has 1 in the freshest theme I??ve came across. It extremely helps make reading your blog significantly easier.
I’ve learn several good stuff here. Certainly price bookmarking for revisiting. I wonder how a lot attempt you put to create this sort of wonderful informative web site.
I’ve been browsing online greater than 3 hours as of late, yet I by no means found any fascinating article like yours. It is lovely value sufficient for me. In my opinion, if all site owners and bloggers made just right content material as you did, the web will be much more useful than ever before.
Very interesting points you have noted, thankyou for posting. “The judge is condemned when the criminal is absolved.” by Publilius Syrus.